ঢাকা,বুধবার, ১৫ মে ২০২৪

বদরখালীতে অপরিকল্পিত গ্যাসপাইপ লাইন স্থাপনে ব্যাপক ক্ষতির মুখে স্থানীয় অধিবাসী!

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :;

চকরিয়া উপজেলার উপকুলীয় ইউনিয়ন বদরখালীতে অপরিকল্পিত গ্যাসপাইপ লাইন স্থাপনের কারনে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে স্থানীয় অধিবাসীরা। ক্ষতির দিক বিবেচনা না করে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করায় বর্তমানে বসতবাড়ি, আবাদি জমির পাশাপাশি বেসুমার মৎস্য ও লবণ মাঠ প্রকল্প ক্ষতির কবলে পড়েছে। শূধু মাত্র একজন ইজারাদারের দুইটি ঘের পাইপ লাইনের কবড়ে পড়ায় অন্তত ৫০ লাখ টাকার ক্ষতিসাধারণের অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী।

অভিযোগ রয়েছে, বদরখালী ইউনিয়নের ১নং ব্লকস্থ ভরাট চর সংস্থার ২নং লটারী ঘোনার ভেতরে ও বাইরের দুইটি ঘোনায় গ্যাস কোম্পানী কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন দুষিত বালি ফেলায় লবণ ও চিংড়ি চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এমনকি বালি ফেলার সাথে সাথে মরে যাচ্ছে চিংড়ি পোনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন জাতের মাছ। এছাড়া লবণ উৎপাদনের পলিথিন সহ মাঠের বিভিন্ন ক্ষতি সাধন হচ্ছে। এভাবে কাজ অব্যাহত রাখলে অন্তত পক্ষে চিংড়ি ও লবণ খাতে অর্ধ কোটি টাকা ক্ষতি হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। চিংড়ি ঘেরের মালিক ও লবণ চাষীরা এ নিয়ে চরম আতঙ্কে ভুগছে।

বদরখালী ইউনিয়নের লম্বাখালী পাড়ার মোজার আহমদের পুত্র কামাল হোছন ও আবুল হোছাইন, ডেমুশিয়া পাড়ার আবদু জব্বারের পুত্র আলী আহমদ, আজম নগর পাড়া ছৈয়দ আহমদের পুত্র মোহাম্মদ আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, একই ইউনিয়নের ডেমুশিয়া পাড়ার বাসিন্দার সিরাজুল হকের ছেলে আবদুচ ছাত্তার থেকে ২০১৭ সাল হতে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১নং ব্লকস্থ ভরাট চর সংস্থার ২নং লটারীর বন্দোবস্থী ঘোনার ভেতরে ও বাইরে ঘোনা দুইটি আমরা লবণ ও চিংড়ির জন্য আমরা ইজারা গ্রহণ করি।

মালিক আবদুচ ছাত্তারের সাথে আমাদের মধ্যে ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর একটি চুক্তিনামা ও সম্পাদন হয়। চুক্তিনামার পর আমরা ২০১৭ সাল থেকে উল্লেখিত ঘোনার ২টিতে চিংড়ি ও লবণ চাষ করে আসছি। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে রয়েল গ্যাস কোম্পানী চট্টগ্রাম আনোয়ারা হতে মহেশখালীর হোয়ানক পর্যন্ত আন্ডার গ্রাউন্ডে পাইপ লাইন বসানোর কাজ শুরু করেছে।

ঘের ইজারাদাররা অভিযোগ করেছেন, গ্যাস লাইনের একটি অংশ বর্তমানে তাদের চিংড়ি ঘেরে পড়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়নের পূর্বে তারা জোরপূর্বক বালি ফেলার কারণে চিংড়ি ঘেরে মজুদ রাখা চিংড়ি পোনাসহ বিভিন্ন জাতের মাছ ও সামুদ্রিক জলজ প্রাণী মরে যাচ্ছে। এছাড়া লবণের মাঠে থাকা পলিথিন ও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে লবণ উৎপাদনের জমি, ব্যাহত লবণ উৎপাদন যার ফলে সাধারণ চাষিরা বিরাট ক্ষতিমুখে পড়েছে এবং এ কাজ চলমান থাকলে তাদের অন্তত ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

ভুক্তভোগীরা দাবি করেন, বিষয়টির আলোকে সমাধানের জন্য বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির পরিচালক ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী হামিদ উল্লাহ্ রয়েল গ্যাস কোম্পানীর পিডি আক্কাছ আহমদের সাথে কয়েক দফা বৈঠক বসলেও কোম্পানী কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়নি।

বদরখালী সমিতির পরিচালক হামিদ উল্লাহ বলেন, গ্যাস কোম্পানির ঠিকাদারের লোকজন অন্য এলাকা থেকে সন্ত্রাসী এনে মনের ইচ্ছে মত কাজ চালিয়ে এলাকার লোকজনে ক্ষতি হবে তা মেনে নেয়া যায় না। গ্যাস কোম্পানীর উন্নয়ন কাজে আমরা খুশি। কিন্তু জনগণের ক্ষতি করে কাজ করবে তা আমরা কোন অবস্থাতেই মানতে রাজি না।

তিনি বলেন, বর্তমানে এলাকার দীর্ঘদিনের পুরোনো জলাশয়ে অপরিকল্পিত গ্যাস লাইন স্থাপনের দূষিত বালি ফেলার কারণে পরিবেশগত সংকট দেখা দিয়েছে। জলাশয়ের পানি পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। যা মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর। জন বসতিপূর্ণ এলাকায় মানুষের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা প্রকট। এ বিষয়ে আমরা স্থানীয় এমপি, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। #

পাঠকের মতামত: